Course Content
প্রথম অধ্যায়ঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
0/11
তৃতীয় অধ্যায়ঃ সংখ্যা পদ্ধতি ও ডিজিটাল ডিভাইস
0/21
একাদশ-দ্বাদশ
About Lesson

হ্যাকিং (Hacking) হলো কম্পিউটার বা ডিজিটাল সিস্টেমে অবৈধ বা অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করার প্রক্রিয়া। হ্যাকিং তিন প্রকারের হয়:
  1. ওয়াইট হ্যাট (White Hat) – বৈধ ও নিরাপত্তা উন্নতির জন্য কাজ করা হ্যাকার।
  2. ব্ল্যাক হ্যাট (Black Hat) – অবৈধ উদ্দেশ্যে, যেমন ডেটা চুরি ও ক্ষতিকর কাজ করা হ্যাকার।
  3. গ্রে হ্যাট (Gray Hat) – অনুমতি ছাড়া সিস্টেমে প্রবেশ করলেও, সঠিক তথ্য প্রদান করতে পারে।
  হ্যাকিং প্রতিরোধে কিছু সাধারণ টিপস:
  1. শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন এবং নিয়মিত পরিবর্তন করুন।
  2. টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (2FA) চালু করুন, যা নিরাপত্তা বাড়ায়।
  3. অ্যান্টিভাইরাস এবং ফায়ারওয়াল ইনস্টল করুন এবং নিয়মিত আপডেট করুন।
  4. সন্দেহজনক ইমেইল, লিঙ্ক বা অ্যাটাচমেন্ট থেকে দূরে থাকুন।
  5. নিয়মিত ব্যাকআপ রাখুন, যাতে ডেটা ক্ষতি হলে পুনরুদ্ধার করা যায়।
  6. সফটওয়্যার ও সিস্টেম আপডেট রাখুন, যা সিকিউরিটি দুর্বলতা কমায়।
  7. পাবলিক ওয়াই-ফাই এড়িয়ে চলুন বা ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (VPN) ব্যবহার করুন।
  8. ডেটা এনক্রিপশন ব্যবহার করুন, বিশেষত সংবেদনশীল তথ্যের জন্য।
এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।  
হ্যাকিংয়ের প্রভাব:
  1. তথ্য চুরি – ব্যক্তিগত ও প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় তথ্য চুরি।
  2. আর্থিক ক্ষতি – ব্যাংকিং তথ্য চুরি করে অর্থ লোপাট।
  3. সুনাম ক্ষতি – গ্রাহকদের আস্থা কমে যায়।
  4. সার্ভিস বিঘ্ন – সিস্টেমে ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটানো।
  5. আইনি জটিলতা – ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারে।
এসব প্রভাবের কারণে সাইবার নিরাপত্তা অত্যন্ত জরুরি।
 

ফিসিং (Phishing) হলো একটি প্রতারণামূলক কৌশল, যেখানে হ্যাকাররা বিভিন্ন নকল ইমেইল, মেসেজ, বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, বা ব্যাংক ডিটেইলস হাতিয়ে নেয়। ফিসিং-এর ধরনসমূহ:
  1. ইমেইল ফিসিং: ভুয়া ইমেইল পাঠিয়ে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করা।
  2. ভিশিং (Vishing): ফোন কলের মাধ্যমে প্রতারণা করে তথ্য চুরি।
  3. স্মিশিং (Smishing): ক্ষুদে বার্তার (SMS) মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য আহরণ।
  4. স্পিয়ার ফিসিং (Spear Phishing): নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর লক্ষ্য রেখে ফিসিং চালানো।
ফিসিং থেকে নিরাপদ থাকার টিপস:
  1. অপরিচিত ইমেইল বা লিঙ্কে ক্লিক না করা।
  2. প্রেরকের ইমেইল ঠিকানা যাচাই করা।
  3. সবসময় URL ঠিকানা ভালোভাবে পরীক্ষা করা।
  4. সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক করার আগে সাইবার নিরাপত্তা সফটওয়্যার ব্যবহার করা।
ফিসিং প্রতারণা থেকে সতর্ক থেকে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

স্প্যামিং (Spamming) হলো বারবার অপ্রয়োজনীয় বা অবাঞ্ছিত মেসেজ, ইমেইল বা বিজ্ঞাপন পাঠানোর প্রক্রিয়া। এটি সাধারণত প্রচারণার জন্য ব্যবহৃত হয়, তবে ব্যবহারকারীর জন্য বিরক্তিকর হতে পারে এবং অনেক সময় ম্যালওয়্যার ছড়ানোর মাধ্যমও হতে পারে। স্প্যামিং-এর প্রকারভেদ:
  1. ইমেইল স্প্যাম: বিপুল পরিমাণে অবাঞ্ছিত ইমেইল পাঠানো, যা প্রায়শই বিজ্ঞাপন বা ফিশিং প্রচেষ্টা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
  2. মেসেজ স্প্যাম: ক্ষুদে বার্তা বা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে অবাঞ্ছিত মেসেজ পাঠানো।
  3. ফোরাম স্প্যাম: ফোরাম বা ব্লগে অবাঞ্ছিত লিঙ্ক এবং বিজ্ঞাপন পোস্ট করা।
  4. সার্চ ইঞ্জিন স্প্যাম: সার্চ রেজাল্টে অপ্রাসঙ্গিক ওয়েবসাইট প্রমোট করা।
স্প্যামিং থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়:
  1. স্প্যাম ফিল্টার চালু রাখা।
  2. সন্দেহজনক ইমেইল বা মেসেজে ক্লিক না করা।
  3. ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখা এবং সন্দেহজনক লিঙ্ক এড়ানো।
  4. নির্ভরযোগ্য অ্যান্টি-স্প্যাম সফটওয়্যার ব্যবহার করা।
স্প্যামিং ব্যবহারকারীর জন্য বিরক্তির কারণ হতে পারে এবং অনেক সময় সাইবার নিরাপত্তা হুমকিরও সৃষ্টি করতে পারে, তাই সচেতন থাকা জরুরি।

সফটওয়্যার পাইরেসি (Software Piracy) হলো সফটওয়্যার বা প্রোগ্রামের অনুমতি ছাড়া কপি, বিতরণ বা ব্যবহার করা। এটি সফটওয়্যার নির্মাতার আর্থিক ক্ষতি এবং আইনি সমস্যার কারণ হতে পারে। সফটওয়্যার পাইরেসির ধরন:
  1. এন্ড-ইউজার পাইরেসি: একাধিক কপি তৈরি করে অনুমতি ছাড়া ব্যবহার।
  2. অনলাইন পাইরেসি: ইন্টারনেটে অবৈধভাবে সফটওয়্যার শেয়ার করা।
  3. কাউন্টারফিটিং: সফটওয়্যারের নকল সংস্করণ তৈরি ও বিক্রি।
  4. হার্ড ডিস্ক লোডিং: কম্পিউটার বিক্রয়ের সময় লাইসেন্সবিহীন সফটওয়্যার ইনস্টল করা।
প্রতিরোধে উপায়: শুধু বৈধ লাইসেন্সযুক্ত সফটওয়্যার ব্যবহার করা, নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে সফটওয়্যার ক্রয়, এবং পাইরেসি সম্পর্কিত আইনি নিয়ম মেনে চলা।

প্লেজিয়ারিজম (Plagiarism) হলো অন্যের লেখনি, ধারণা, বা কাজকে অনুমতি ছাড়া নিজের হিসেবে উপস্থাপন করা। এটি একটি গুরুতর নৈতিক ও আইনগত অপরাধ, বিশেষ করে শিক্ষাবিদ ও সৃজনশীল কাজের ক্ষেত্রে। প্লেজিয়ারিজমের ধরন:
  1. শব্দের প্লেজিয়ারিজম: অন্যের লেখা শব্দের শব্দের হুবহু কপি করা।
  2. আইডিয়ার প্লেজিয়ারিজম: অন্যের ধারণা বা কনসেপ্টকে নিজের হিসেবে উপস্থাপন করা।
  3. অপ্রকাশিত কাজের প্লেজিয়ারিজম: প্রকাশিত না হওয়া কাজের কপি।
  4. সংশোধিত প্লেজিয়ারিজম: অন্যের কাজের সামান্য পরিবর্তন করে সেটি নিজের নামে উপস্থাপন।
প্লেজিয়ারিজম প্রতিরোধের উপায়:
  1. উৎস উল্লেখ করা: ব্যবহৃত তথ্য বা ধারণার উৎস সঠিকভাবে উল্লেখ করুন।
  2. নিজস্ব কাজ তৈরি করা: নিজের চিন্তা ও রচনার প্রতি জোর দিন।
  3. প্লেজিয়ারিজম চেকার ব্যবহার: অনলাইন টুল ব্যবহার করে নিজের লেখা যাচাই করা।
প্লেজিয়ারিজম এড়িয়ে চলা শিক্ষাগত ও পেশাদার ইন্টেগ্রিটির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

WhatsApp icon